ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে শেখ হাসিনার বাণী


১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। ১০ এপ্রিল ১৯৭১-এ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক করে গঠিত হয় বিপ−বী সরকার। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরেরমুজিব নগরে বিপ−বী সরকার শপথ গ্রহণ করে। ১৯৭০ সনের সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় লাভ করে। কিন্তু ইয়াহিয়া সরকার
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর না করে তালবাহানার আশ্রয় নেয়।বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লক্ষ লক্ষ মানুষের ঐতিহাসিক জনসভায় ঘোষণা দেন ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর ঐ ঘোষণাই মুলত: স্বাধীনতার ঘোষণা। বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়া সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন শুরু এবং দেশে বিকল্প আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনা করেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই তখন দেশ পরিচালিত হত। এ অবস্থায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙ্গালির উপর আঘাত হানে।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চ প্রত্যুষে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার অপরাধে ইয়াহিয়া সরকার বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে।বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে বিপ−বী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক পদেদায়িত্ব দেয়া হয়। জনাব তাজউদ্দিন আহমেদ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, জনাব এম. মুনসুর আলীওজনাব এ.এইচ.এম. কামরুজ্জামান প্রমুখকে মন্ত্রী করে উক্ত বিপ−বী সরকার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলার আম বাগানেশপথ গ্রহণ করেন। এই বিপ−বী সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মুক্তিযুদ্ধ, রাজনৈতিক কর্মকান্ড, কূটনৈতিক ও প্রচার ক্ষেত্রে বিশ্ব জনমত গঠন এবং এক কোটি উদ্বাস্তুর পুর্নবাসন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেছিলেন। মুজিবনগর সরকারের
দূরদৃষ্টি ও দক্ষতার ফলে মাত্র নয় মাসে বাংলাদেশ পাকিস্তানের দখলদার বাহিনীকে অস্ত্রসমর্পণে বাধ্য করে।

আমি মুজিবনগরের বিপ−বী সরকারের কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত পরলোকগত এবং জীবিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সেনাকর্মকর্তা ও সদস্য, প্রশাসনকি কর্মকর্তা, বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ, কূটনৈতিকবৃন্দ এবং বিদেশী বন্ধুদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করছি। একই সাথে মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।এবারের মুজিবনগর দিবসে মুক্তিযুদ্ধের মহত্ত্বর অর্জনসমূহকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানজানাচ্ছি। আসুন আমরা সকলে মিলে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ দেশকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌছে দিতে সচেষ্ট হই। গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং একটি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারে দায়িত্ববান হয়ে চুড়ান্ত সাফল্যের পথে এগিয়ে যাই।
মুজিব নগর দিবস অমর হোক।



খোদা হাফেজ।
জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
---------------------------


তথ্যসূত্র :- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ